ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে বিএনপি যৌক্তিক সময়ে নির্বাচনের কথা বলে আসছে। একপর্যায়ে সরকারও জানায় ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে ভোট। তবে আরও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ পেতে গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির নেতারা।
সেই বৈঠকে আগামী ডিসেম্বর মাসে ভোটের জন্য জোর দিয়েছে বিএনপি। দলটি বোঝাতে চেয়েছে নির্বাচন যত দেরিতে হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত বাড়বে।
তবে ভোটের রোডম্যাপ না পেলেও বিএনপি নেতারা মনে করেন, ডিসেম্বরই নির্বাচনের উপযুক্ত সময়। তাছাড়া, দেশে নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্পও নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। কিন্তু তার একটি রোডম্যাপ থাকতে হবে। আমরা এখনই রোডম্যাপ চাচ্ছি। কিন্তু সরকার তা দিতে রাজি নয়। ডিসেম্বরের পর রমজান ও ঈদ রয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন আয়োজন কীভাবে সম্ভব? তাই নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরই আদর্শ সময়।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সারা বিশ্ব যেখানে গণতন্ত্রের দিকে ঝুঁকে রয়েছে, সেখানে একটি অগণতান্ত্রিক দেশ থাকা ঠিক নয়। সেক্ষেত্রে নির্বাচন নতুন কোনও দাবি নয়। জুন মাসে দেশে বর্ষাকাল থাকে। তাই এই মাসটি নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নয়।
ভোটের সময়সীমা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে একমত না হলেও বিএনপি এখনই মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচিতে যেতে আগ্রহী নয়। সামনে কোরবানীর ঈদ ও বর্ষা মৌসুম। তাই ঘরোয়া আয়োজন থেকে রোডম্যাপের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে পারে দলটি।
এ বিষয়ে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, বিএনপির মধ্যে ডিসিপ্লিন রয়েছে। দলটি কোনও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি নয়। কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হলে তা খোলাখুলিভাবে জানানো হবে।
অন্যদিকে, যমুনায় বৈঠকের পর বিএনপি নেতাদের উপলব্ধি নির্বাচন নিয়ে সরকার এখনও প্রস্তুত নয়। সরাসরি না বললেও একটি অশুভ শক্তি অনির্বাচিত সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সক্রিয় রয়েছে বলে দলটিতে সন্দেহ রয়েছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে চাইলে ফ্যাসিবাদের দোসররা অনেকভাবে সুযোগ নিতে পারে। এটি হলে গণঅভ্যুত্থানের আশা-আকাঙ্খা জলাঞ্জলি যাবে। এটি বিএনপি হতে দিতে চায় না।
আগামী সপ্তাহ থেকে ভোটের রোডম্যাপ ইস্যুতে যুগপৎ আন্দোলনের শরীকদের সাথে মতবিনিময় শুরু করতে পারে বিএনপি।
মন্তব্য করুন