গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের বদ্ধ দুয়ার খুলতে শুরু করে। গত ৮ মাসে পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি দ্বিগুণ বেড়েছে। করাচি বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রামের সরাসরি কনটেইনার জাহাজ যোগাযোগও চালু হয়।
দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে বাংলাদেশে আসেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে বৈঠক হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সেই বৈঠকে কী পেলো বাংলাদেশ?
এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বললেন, গত ১৫ বছর পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের স্থবিরতা ছিল। সে স্থবিরতা আমরা কাটিয়ে উঠেছি।
এদিকে, একাত্তরের গণহত্যার জন্য সাধারণ ক্ষমা, ক্ষতিপূরণ, নায্যতায় সম্পদ ফেরত ইত্যাদি ঐতিহাসিক অমিমাংসিত বিষয়। এই মুহুর্তে বাংলাদেশের পাওনা অর্থ ফেরত দিতে গেলে দেশটিকে রিজার্ভের এক-তৃতীয়াংশ খরচ করতে হবে। এমন বাস্তবতায় সম্পর্ক কতটা এগুবে?
মাহফুজুর রহমান বলেছেন, এক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পনের শর্তের মধ্যেই ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি উল্লেখ করা যেত। একাত্তরে যুদ্ধে আমাদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করা দেশটির পক্ষে প্রথম কাজ হতে পারে।
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত মনে করেন, একাধিক অমিমাংসিত বিষয় থাকলেও দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে বর্তমান সম্ভাবনাগুলোর ওপর জোর দিতে হবে।
মাহফুজুর রহমান আরও বললেন, অমীমাংসীত বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসলে এই মুহুর্তের জন্য জরুরি বিষয়গুলো খানিকটা পেছনে পড়ে যায়। অমীমাংসীত বিষয়গুলো একটি ফোল্ডারে রেখে সম্ভাবনার দিকগুলো নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যেতে পারে। যখনই দুই দেশ এতে পারস্পরিকভাবে লাভবান হতে থাকবে, তখন কেউ-ই অতীতের একটি অমীমাংসীত বিষয় রেখে দিতে চাইবে না।
আমনা বালুচের সফরের সপ্তাহখানেক ব্যবধানে বাংলাদেশে আসছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তিনি একইসাথে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রীও। আপাতত এমন কূটনৈতিক অগ্রগতিকে পুঁজি করে বাংলাদেশকে এগুতে হবে, এমন বক্তব্য বিশ্লেষকদের।
মন্তব্য করুন